ঈদ মানেই আনন্দ, ঈদ মানেই পরিবার-প্রতিবেশী এবং স্বজনদের সাথে হাঁসি-খুশি কিছু সুন্দর মুহুর্ত। পরিবার কিংবা প্রিয় বন্ধুমহলের সাথে যারা ভ্রমণ করতে ভালোবাসেন, তারা এই ঈদের ছুটিতে চাঁদপুরের উল্লেখ্য কিছু দর্শনীয় স্থানে না বেড়াতেই গেলেই নয়।
১/ বড়ষ্টেশন মোলহেড: চাঁদপুর কালিবাড়ি বায়তুল আমিন রেলওয়ে মসজিদ চত্বর থেকে অটো কিংবা রিকশা করে চলে যেতে পারেন ৫ থেকে ৭- মিনিটের মধ্যেই। বড়স্টেশনে নেমেই যেখানে আপনি দেখতে পাবেন ইলিশের ভাস্কর্য ও শিশুদের বিনোদনের ব্যবস্থা। সামনে এগিয়ে যাওয়ায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ, ভেতরে চোখ যতদূর যাবে সবুজ সব গাছপালা। আর বড় বড় গাছের ফাঁক গলিয়ে পড়ছে চিকন রৌদ্রের রশ্মি।
ত্রি-মোহনার কোলে ঘেঁষে বসার জন্য ইট-পাথরের রং-বেরঙের বেঞ্চ আছে, চাইলে আপনি তীরের ঢালে বসেও সারাদিন কাটাতে পারেন। সেখানে পার করা সময়টুকুতে ক্লান্তি আপনাকে চুইবে না বরং জিভেজল আনা কিছু খাবারের স্বাদ নিতে পারবেন।
২/ রুপসা জমিদার বাড়ি: মেঘনা পাড়ের সমৃদ্ধশালী অঞ্চল চাঁদপুরের গৌরবময় ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এই জমিদারবাড়ি ও পরিবারের ইতিহাস। চাঁদপুর জেলা সদর থেকে মাত্র ২১-কিলোমিটার দূরে ফরিদগঞ্জ উপজেলার রুপসা বাজারে অবস্থিত এই জমিদার বাড়িটি।
রুপসা বাজার সিএনজি স্টান্ড নেমে পশ্চিম দক্ষিণ কোনে নজর দিলেই দৃষ্টিতে পড়বে জমিদারবাড়ির সিংহদ্বার। পাশেই কারুকার্জ খচিত একটি মসজিদ। মসজিদের দক্ষিণ পাশে একটি কবরস্থান। এর প্রতিটি ফলকে লেখা রয়েছে চিরনিন্দ্রায় শায়িত ব্যক্তিদের সুকর্মের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা। পথ ধরে সামনে এগুলেই চোখে পড়বে ঘাঁট বাঁধানো দীঘি। ঐতিহ্যমণ্ডিত কাছারি ভবন এবং সামনেই নজরে পড়বে প্রায় ৩-শত বছরের এই জমিদার বাড়ি।
৩/ ফারিশা হোটেল এন্ড রোসোর্ট: ফারিশা হোটেল এন্ড রিসোর্ট বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের সবচেয়ে বড় রিসোর্ট। প্রায় ২০ একর জমির উপর তৈরি করা এই রিসোর্ট চাঁদপুর সদরের ৪নং শাহ্-মাহমুদপুর ইউনিয়ন কুমারডুগী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন মাস্টার বাজার রোডে এক কিলোমিটার ভিতরে আলুমুড়া প্রাইমারি স্কুল সংলগ্ন ফারিশা হোটেল এন্ড রিসোর্ট।
শিশুদের জন্য নানান বিনোদন রাইডস, মনমুগ্ধকর লেকের ভেতর রঙিন নৌকা, মুখরোচক খাবারের জন্য রেস্তোরাঁ। এবং সিল্ক ওয়েজ এগ্রো লিমিটেড নামে একটি গরুর ফার্ম, ফরমালিন মুক্ত ফ্রুটস এন্ড ভেজিটেবলস গার্ডেন।
৪/ চাঁদপুর মিনি কক্সবাজার:
চাঁদপুর বড়স্টেশন মোলহেড থেকে ট্রলার যোগে প্রায় দেড় কিলোমিটার পশ্চিমে পদ্মা ও মেঘনা নদীর বুকে জেগে উঠেছে চর। চারদিক জলবেষ্টিত, বালুকাময় নদীর তীর ও খরস্রোতা নদীর ছোট -ছোট ঢেউয়ের কারনে জায়গাটিকে মিনি-কক্সবাজার হিসেবে তুলনা করা হয়েছে।
এখানে বালুচরে খালি পায়ে হাঁটার সময় নদীর স্রোত এসে আছড়ে পড়বে আপনার পায়ে। তবে এই স্রোতের পুরোটুকুতেই থাকবে পরিষ্কার মিঠা পানি। কখনও কখনও কচুরিপানা ছুটে চলে আসবে আপনার পায়ের কাছে। চাইলে দলবল নিয়ে নদীর পানিতে হুটোপুটি করতে পারবেন। চরের একদিকে উত্তাল পদ্মার ঢেউ ছুটে আসছে আর বিপরীত দিকে মেঘনা নদীর ঢেউ আছড়ে পড়ার দৃশ্যে আপনাকে মুগ্ধ করবে। আপনিই এই ঢেউয়ের মাঝে গা-ভাসিয়ে দিতে না পারলে তো আসল মজাই পাবেন না। চাইলে সাতার কাটতে পারবেন নদীর তীরে৷ আর এখানে নদীর পানি সমুদ্রের মতো লবনাক্ত ও বালু মিশ্রিত নয় বলে এখানে গোসল করেও দারুণ মজা পাবেন।
মেঘনা-ডাকাতিয়া আর ধনাগোদা নদীর জলধারায় বিধৌত দেশের অন্যতম প্রাচীন জনপদ চাঁদপুর।
মেঘনা কন্যা চাঁদপুরকে কেউ বলেন,‘রুপসী চাঁদপুর’ কেউ বলেন,‘ইলিশের দেশ চাঁদপুর’। চাঁদপুরে বেড়াতে আসলে আসল ইলিশের স্বাদ নিতে ভুলবেন'না।
চাঁদপুর বড়স্টেশন মোলহেড এর পাশেই ইলিশের বাজার, সেখান থেকে পছন্দমতো আস্ত ইলিশ কিনে পাশের যে'কোনো হেটেল/রেস্তোরাঁয় নিয়ে ইচ্ছানুযায়ী রান্না করে খেতে পারবেন।
চাঁদপুর জেলায় আপনার ভ্রমণ গাইড/সঙ্গী হিসেবে কাউকে প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন: 01788068060
0 মন্তব্যসমূহ