কড়ৈতলী জমিদার বাড়ি, ফরিদগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত এই ঐতিহাসিক নিদর্শন

চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলায় ১৭৫-টি গ্রাম রয়েছে। এই  ১৭৫-টি গ্রামের মধ্যে একটি গ্রামের নাম হলো কড়ৈতলী গ্রাম। আর এই গ্রামেই রয়েছে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে থাকা ঐতিহ্যবাহী এক জমিদার বাড়ি। কড়ৈতলী বাজারের দক্ষিণ কোণের পশ্চিম দিকে অবস্থিত এই জমিদার বাড়ি। যা এখানে স্থানীয় সাধারণ মানুষের কাছে বাবুর বাড়ি নামেই বেশ পরিচিত।


প্রায় ৮শতক আগে বরিশাল জেলার অধিবাসী (বাংলা-১২২০) সালে হরিশ চন্দ্র বসু নামের একজন এই কড়ৈতলী জমিদার বাড়িটির গোড়াপত্তন করেন। তিনি নিলামের মাধ্যমে এই জমিদারি ক্রয় করেছিলেন,  প্রায় ৭০-ছর ধরে এই জমিদার বাড়ির জমিদারি করার পর মৃত্যুবরণ করেন।

শত বছর বয়সে (১২৯০ বঙ্গাব্দে) পরলোকগমণ করেন। পরবর্তীতে দীর্ঘসময় ধরে তার উত্তরসূরীরা এখানকার জমিদারি করেন। ভারতবর্ষ ভাগের পর ইংরেজি ১৯৫১ সালে শেষ জমিদার গোবিন্দ বসুর হাত ধরেই এই জমিদার বাড়ির পতন ঘটে।

জমিদার বাড়িটি ৩টি ভবন, একটি দুর্গা মন্দির, বাবুর দীঘি নামে একটি বিশাল দীঘি, দীঘির মধ্যে একটি শান বাঁধানো ঘাট ও একটি দর বার হল নিয়ে গঠিত। এছাড়াও কড়ৈতলী বাজারের মধ্যস্থানে শ্মশানকালী মন্দির রয়েছে। মূল ভবনটি (১নং ভবন) ছিল জমিদারদের বসবাসের জন্য। আর ২নং ও ৩নং ভবন ব্যবহার করা হতো মালামাল ও প্রজাদের সাজা (কারাগার) দেওয়ার জন্য। মূল ভবনটি (১নং ভবন) ৩ তলা বিশিষ্ট। আর ২নং ও ৩নং ভবন ২ তলা বিশিষ্ট। এছাড়াও এই বাড়িটিতে একটি সুড়ঙ্গপথ রয়েছে জমিদারদের আত্মগোপন করার জন্য। কিন্তু বর্তমানে এটি বালু দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। লোকমুখে কথিত আছে এখানে একটি আঁধার মানিক (গুপ্তধন রাখার ঘর) রয়েছে।

কড়ৈতলী জমিদার বাড়িটি বর্তমানে পরিচর্জা ও অবহেলার কারণে লতা-পাতা, বন-জঙ্গলে জরাজীর্ণ হয়ে রয়েছে। দুইতলা বিশিষ্ট প্রাসাদগুলোর বিভিন্ন অংশে ফাটল ধরেছে এবং অনেক অংশ ভেঙ্গে গিয়েছে। স্থানীয়রা ভবনগুলোর ভিতরের মাটি এবং দেয়ালের ইটগুলো খুলে নিয়ে যাচ্ছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ